*দাঁতের যত্ন*
আপনার মুখের সৌন্দর্যকে
বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় একটুকরো সুন্দর হাসি। তবে সুন্দর হাসির অধিকারী হতে গেলে দাঁতের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে অবশ্যই।
কথায় বলে “দাঁত থাকতে দাঁতের
মর্ম কেউ বোঝে না”। কথাটি বেশ সত্য।
কারণ দেহের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যত্ন
ভালোভাবে নিলেও আমরা দাঁতের যত্নে বলতে গেলে কিছুই করি না। সেকারণেই দুদিন পর পর
দাঁতে ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ি। আর দাঁতের ব্যথা কতোটা ভয়াবহ যন্ত্রণার তা সকলেরই
কমবেশি জানা রয়েছে। তাই দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেয়া অনেক বেশি জরুরী।
নিয়মিত যত্ন না নিলে দেখা
দিতে পারে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা, দাঁতের মাড়ি ফুলা, রক্ত
পরা, ক্যাভিটি,
মুখের আলসার, এমনকি মুখের ক্যানসারও।
তাই দাঁত, মাড়ি বা মুখের ভেতরের যে কোনও ছোট বড় সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। চলুন তবে আজ জেনে
নেয়া যাক দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় যে কাজগুলো করা অনেক জরুরী।
প্রশ্নঃ দাঁতের যত্নে কোন ধরণের ব্রাশ
ব্যবহার করা ভালো?
দাঁতের যত্নের জন্য অবশ্যই ভালো
মানের ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। বাজারে কিছু নরমাল ব্রাশ কিনতে পাওয়া যায় এই ব্রাশগুল
দাঁতের মারি ও দাঁতের অনেক ক্ষতি করে থাকে। তাই আপনার অবশ্যই ভালমানের ব্রাশ
ব্যবহার করা উচিত।
ভালো
ব্রাশের কিছু বৈশিষ্ট্য হল -
·
ছোট মাথা যা সহজে কঠিন জায়গায় পৌঁছায়।
·
নরম ও গোল মাথা যুক্ত ব্রিসোল যা মাড়ির ক্ষতি করবে না।
·
চিকন গলা যা ব্রাশ কঠিন জায়গায় পৌঁছুতে সাহায্য করে।
এছাড়াও
আরো কিছু ভালো বৈশিষ্ট্য
·
ক্যাপ যুক্ত থাকা,
যাতে
তেলাপোকা ইত্যাদি ব্রাশের মাথায় বসতে না পারে।
·
মাথায় পেছনের দিকে জিহ্বা পরিষ্কারের জন্য আলাদা খাজ থাকা।
প্রশ্নঃ দাঁতের হলুদ ভাব ও ময়লা জনিত দাগ দূর করার জন্য ভালো উপায় কি?
আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে দাঁতের
এই হলুদ ভাব প্রাকৃতিক নাকি প্লাক/ক্যালকুলাস জমে এরকম হয়েছে। প্লাক/ক্যালকুলাস
জমে হলুদ হয়ে থাকে তবে স্কেলিং পলিশিং এর মাধ্যমে এটা সহজেই দূর হয়ে যাবে।
যদি
প্রাকৃতিক হয়ে থাকে তবে দেখুন যে এটা আপনার স্কিন কালারের সাথে মেলে কিনা।
বেশিরভাগ সময় ফর্সা মানুষদের হালকা হলুদ দাঁত থাকে। এটাই স্বাভাবিক সৌন্দর্য।
এটাকে সাদা ঝকঝকে করলে খারাপ দেখাতে পারে। তবে যদি প্রাকৃতিকভাবে হলদে দাঁতকে
নিতান্তই সাদা করতে হয় তখন "ব্লিচিং" পদ্ধতির মাধ্যমে সাদা করা যেতে
পারে। ডাক্তার তার ক্লিনিকে কিংবা বাসায় ব্যবহারের জন্য পেস্ট দিবেন, আপনি এই Dent Assure whitening Toothpaste ব্যবহারে
ভালো সুফল পাবেন। তবে নিজ উদ্যোগে বাসায় কোন কেমিক্যাল যেমন সোডা, লেবুর রস ইত্যাদি ব্যবহার না করাটাই
ভালো।
বাচ্চারা দাঁত মাজতে না চাইবার কারণ হল সাধারণত বাবা
মায়েরা বাচ্চার দাঁত ওঠার পর থেকে ব্রাশ করানোর চেষ্টা করেন। আসলে ব্রাশ করার
অভ্যাস করতে হবে আরো আগে। একেবারে জন্মের মাসখানেক পর থেকেই। নরম সুতি কাপড় বা গজ
হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে গালের ভিতরে ও মাড়ি মুছে দিতে হবে দিনে অন্তত একবার।
এতে দুধ জমে মুখে ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কমে। সাথে সাথে বাচ্চাদের ব্রাশ
করার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
আর যদি বাচ্চাকে এই মুহূর্তে ব্রাশ করতে উৎসাহিত করতে চান , ফ্যামিলি ডেন্টিস্ট এর কাছে নিয়ে যেতে পারেন। বাচ্চারা সাধারণত অথরিটির কথা
শোনে। এই কাজ বাড়ির বড় কেউও করতে পারেন যার সাথে বাচ্চার সন্মানের সম্পর্ক থাকে।
যেমন বড় জেঠা, বড় মামী এরকম কেউ। যদিও নেগেটিভ মোটিভেশন আমরা নিরুৎসাহিত
করি, তবুও বাচ্চাদের ক্যারিজ হওয়া দাঁত ইত্যাদির ছবি দেখিয়েও
বাচ্চাকে বোঝাতে পারেন।
প্রশ্নঃ দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার কী কী কারণ থাকতে পারে?
দাঁতের
মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সবচাইতে কমন কারণ হল মাড়ির প্রদাহ বা জিঞ্জিভাইটিস (gingivitis)
জিনজিভাইটিস ছাড়াও আরো কয়েক
কারণে রক্তপাত হতে পারে।
v প্লাক বা ক্যালকুলাস জমলে
v ভিটামিন সি এর অভাবে
v
কিছু উচ্চরক্তচাপ ,
খিচুনি ও
গর্ভনিরোধক ঔষধ সেবন করলে
v বয়:সন্ধিকালে
v গর্ভাবস্থায়
v ডেঙ্গুর এডভ্যান্স স্টেজে
v ব্লিডিং ডিজ অর্ডার যেমন
হিমোফিলিয়া ,
আই টি পি
ইত্যাদি।
এই রক্তপাত আবার দুই ধরনের হতে
পারে।
v ব্রাশ করতে গেলে বা খেতে গেলে।
v নিজে নিজেই রক্তপাত হওয়া।
এটার জন্য ধীরেসুস্থে চিকিৎসকের
শরণাপন্ন হলে সমস্যা নেই
Note: প্রতিদিন ভেস্টিজের Dent Assure Toothpaste ব্যবহার করুন সমস্যা সমাধানে ভালো
সুফল পাবেন।
প্রশ্নঃ এর প্রতিরোধের উপায় কী?
1. প্রতিদিন ভেস্টিজের Dent Assure Toothpaste ব্যবহার করুন সমস্যা সমাধানে ভালো
সুফল পাবেন।
2. যদি দাঁতে ইনফেকশন
হয়ে থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যাওয়া ও
ডাক্তারের পরামশ্য নেয়া উচিত।
১)
নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন
ছোটো বড় সকলেই আলসেমি করে দুবেলা দাঁত ব্রাশ করেন না। ফলে দাঁতে ক্যাভিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। তাই দু বেলা নিয়মিত দাঁত ব্রাশ থেকে একেবারেই বিরত থাকবেন না। অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ছোটো বড় সকলেই আলসেমি করে দুবেলা দাঁত ব্রাশ করেন না। ফলে দাঁতে ক্যাভিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। তাই দু বেলা নিয়মিত দাঁত ব্রাশ থেকে একেবারেই বিরত থাকবেন না। অভ্যাস গড়ে তুলুন।
২) মুখের
চোয়ালের ব্যায়াম করুন
এই কাজটি যে জরুরী তা অনেকেই জানেন না।
কিন্তু মাড়ির সুরক্ষায় মুখের চোয়ালের ব্যায়াম অতি জরুরী। প্রতিদিনই চোয়ালের
ব্যায়াম করুন। মুখ খোলা ও বন্ধ করুন। মুখ খোলার সময় একটু কট করে সামান্য আওয়াজ
পেলে ভয় পাবেন না। এটি সাধারণ ব্যাপার। এই ব্যায়ামটি ২ মিনিট করুন প্রতিদিন।
অন্যথায় আপনি সুগার ফ্রি চুইংগাম চিবোতে পারেন।
৩) জিহ্বা
পরিস্কার রাখুন
আমরা দাঁত ব্রাশ প্রতিদিনই করি কিন্তু জিহ্বা
পরিস্কারের কথা ভুলে যাই। কোনো গুরুত্ব দিই না। এই ভুল কাজটি করবেন না। প্রতিবার
ব্রাশ করার সাথে সাথে জিহ্বা পরিস্কার করা অবশ্যই দরকার। কারন অপরিষ্কার জিহ্বার
জন্য দাঁত ও মাড়ির অনেক ক্ষতি হয়।
৪) চিনি ও
চিনি যুক্ত খাবার কম খাবেন
চিনি দাঁত ও মাড়ির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
চিনি মুখে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। এতে দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির রক্ত পড়ার সমস্যা হয়।
যা পরবর্তীতে মাড়ির ইনফেকশনে পরিনত হয়। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়ার কারণে মুখে দুর্গন্ধের
সৃষ্টি হয়। সুতরাং যতটা সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলবেন।
৫) পান, সিগারেট ও তামাক এড়িয়ে চলুন
পান, সিগারেট ও তামাক দাঁত ও মাড়ি উভয়ের জন্য
মারাত্মক ক্ষতিকর। এই ধরনের মাদক দ্রব্য দাঁতের গোঁড়ায় ও মাড়িতে ইনফেকশনের সমস্যা
তৈরি করে ও পরবর্তীতে মাড়ির ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই পান, সিগারেট ও তামাককে না বলুন।
৬) নিয়মিত
চেকআপ করান
দাঁতের কিংবা মাড়ির ব্যাথায় আমরা খুব কমই ডাক্তারের
কাছে যাই। কিন্তু সামান্য ব্যাথা অবহেলা করলে তা পরবর্তীতে অনেক মারাত্মক আকার
ধারন করতে পারে। সুতরাং নিয়মিত চেকআপ করান, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখুন।
Comments
Post a Comment